✔ফ্রিল্যান্সিং কি?
অনেকেই মনে করেন ফ্রিল্যান্সিং মানে একপ্রকার জব কিন্তু আসলে তা না। ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে মুক্তভাবে জবের একটি মাধ্যম। ইচ্ছা হলে কাজ করবো, ইচ্ছা না হলে করবোনা, বিষয়টা অনেকটাই এরকম। মনে করুন, আপনি গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ খুব ভালো করেন। কিন্তু আপনি চাচ্ছেন না কোনো একটি কোম্পানীতে ধরাবাঁধা সময়ের জব করতে। তাহলে আপনি বেছে নিতে পারেন মুক্তভাবে কাজ করার মাধ্যম ফ্রিল্যান্সিং। তেমনি একজন ফটোগ্রাফার অধিকাংশ সময়েই ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করেন। তার যখন ভালো লাগে এবং ভালো সুযোগ পান তখন তিনি কাজ করতে যান। আবার একজন গায়ক চাইলে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে পারেন। কারন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের কোনো ধরাবাঁধা সময় নেই। ভালো লাগলে গান গেতে যান, ভালো না লাগলে যান না। ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে মজার বিষয়ই এটা যে আপনি চাইলে আপনার ইচ্ছা মতো সময়ে কাজ করতে পারেন, কাজের প্রেশার বেশি হলে কাজ না করেও থাকতে পারেন।
✔আউটসোর্সিং কি?
মূলত দুইটি উপায়ে আউটসোর্সিং করা যায়, যেমন - আউটসোর্সিং এবং অফশোর আউটসোর্সিং। আউটসোর্সিং বলতে সাধারণত বুঝায় নিজের কাজটি নিজে না করে অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে নেয়া। এমন হতে পারে, আপনার কোম্পানীতে নতুন বছরের জন্য ২০ রকম ক্যালেন্ডার ডিজাইনের কাজ জমা হয়েছে কিন্তু লোকবলের অভাবে আপনি কাজগুলো করতে পারছেন না। তাই কাজগুলো আপনি নিজে না করে যখন অন্য কোনো ব্যাক্তি বা কোম্পানির মাধ্যমে করিয়ে নিচ্ছেন তখন সেই উপায়টি হচ্ছে আউটসোর্সিং। সোজা কথায় বললে, “নিজে কাজ না করে অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে নেয়া হচ্ছে আউটসোর্সিং”। অফশোর আউটসোর্সিং বলতে বুঝায় যখন আপনার একটি কাজ নিজ দেশে না করিয়ে দেশের বাইরে থেকে করিয়ে নেয়া। সাধারণত আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া জোনের মানুষজন অফশোর আউটসোর্সিং করে থাকেন। তার টেকনিক্যাল বিষয়গুলো যেমন গ্রাফিক এবং ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, মাল্টিমিডিয়া, বিভিন্ন প্রোগ্রামিং এর কাজগুলো মধ্যম বা নিম্ন আয়ের দেশগুলো থেকে তুলনামূলক কম মূল্যে করিয়ে নিয়ে থাকেন। এই জন্য বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, রাশিয়া সহ আরো কিছু দেশের ডেভেলপারদের অনেক চাহিদা রয়েছে।
✔ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস
সাধারণত ফ্রিল্যান্সররা বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করে থাকেন। মূলত এই মার্কেটপ্লেসগুলো আউটসোর্সিংকারিদের সাথে ফ্রিল্যান্সারদের সংযোগ স্থাপন করে থাকেন। যারা আউটসোর্সিং বা জব পোস্ট করে থাকেন তাদের বলা হয় বায়ার বা ক্লায়েন্ট এবং যারা কাজগুলো সম্পন্ন করেন তাদের বলা হয় সেলার বা ফ্রিল্যান্সার। বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত মার্কেটপ্লেসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় তালিকায় রয়েছে ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার.কম, গুরু.কম সহ আরো বেশ কিছু অনলাইন সাইট রয়েছে। মার্কেটপ্লেসগুলো সেলারদের কাছ থেকে ক্ষেত্র বিশেষে ১০% থেকে ২০% পর্যন্ত চার্জ নিয়ে থাকে। এই সাইটগুলোতে কাজ করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে কাজ শেষ হওয়ার পর ক্লায়েন্ট এর কাছে বারবার টাকা চাওয়া বা ধর্না দেয়ার বিষয় থাকে না। কারন সবকিছু ঠিকঠাক সম্পন্ন হলে ক্লায়েন্ট এর একাউন্ট থেকে অটোমেটিকালি সেলার এর একাউন্টে ডলার ট্রান্সফার হয়ে যায়।
✔ ফ্রিল্যান্সিং কাদের জন্য?
--যাদের গতানুগতিক ৯ টা - ৫ টা অফিস করতে ভালো লাগেনা।
--যাদের সরকারি-বেসরকারি বা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির জব ভালো লাগে না।
--যারা নিজের স্কিল সম্পূর্ণ নিজের মতো করে ব্যবহার করতে চায়।
--যাদের ইংরেজি এবং অন্যান্য ভাষা সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে এবং তা নিয়মিত ব্যবহার করতে ইচ্ছুক।
--যারা বিদেশী ক্লায়েন্ট বা বিদেশীদের সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক।
--যারা নিজের বাসায় বসে, নিজের সময়মতো কাজ করতে ইচ্ছুক।
--যারা পড়াশুনা এবং জবের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের জন্য কিছু করতে ইচ্ছুক।
--যাদের সারাজীবন সৎ পথে অতিবাহিত করার ইচ্ছা এবং মানষিকতা আছে।
--যাদের প্রতিনিয়ত নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার ইচ্ছা আছে।
--যাদের নতুন নতুন বিষয় প্রতিনিয়ত শেখার ইচ্ছা আছে।
--যাদের অসম্ভব ধৈর্য আছে এবং ফলাফল পাওয়া পর্যন্ত লেগে থাকার প্রবণতা আছে।
✔ফ্রিল্যান্সার হওয়ার আগে যা জানা গুরুত্বপূর্ণ
--আগে নিজেকে জানুন। আপনার কি ভালো লাগে, ভালো লাগার মাত্রা কতটুকু।
--আপনি কি বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে ইচ্ছুক? যদি জেনে না থাকেন, তাহলে বিশেষজ্ঞ এবং এই সেক্টরে কাজ করছে এমন কারো পরামর্শ গ্রহণ করুন।
--আপনার ধৈর্যের সীমা জানুন।
--আপনি কি ফলাফল প্রাপ্তি পর্যন্ত ধৈর্য ধারন করতে পারবেন?
--আপনি কি প্রতিদিন কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা কাজ শেখার পিছনে ব্যয় করতে পারবেন?
--আপনার কি নতুন নতুন বিষয় শেখার প্রতি আগ্রহ আছে?
--আপনি কি অনলাইন মাধ্যমে যোগাযোগ এবং কাজ করা, এই পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত?
✔ ভালো ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য যে সকল বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন
--নির্দিষ্ট সময়সূচি তৈরি করাঃ নিজেকে একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রথমেই আপনাকে কাজ শেখা এবং করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করতে হবে। সে সময়সূচী এমনভাবে মানতে হবে যেনো অন্য কোনো কিছু আপনাকে বায়াসড করতে না পারে।
--কঠোর পরিশ্রম করার মানষিকতাঃ ফ্রিল্যান্সিং জগতে কঠোর পরিশ্রমের বিকল্প নেই। কাজ শেখা থেকে শুরু করা কাজ করা, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সব পর্যায়েই আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তাই সেভাবেই নিজেকে তৈরি করুন।
--শেষ পর্যন্ত লেগে থাকাঃ ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে আপনি কখনোই বলতে পারবেন না সাফল্য কখন ধরা দিবে। তাই কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করা এবং শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করতে হবে।
--কম্পিউটার এবং ইংরেজি ভাষায় দক্ষতাঃ অবশ্যই আপনাকে বেসিক কম্পিউটার জানতে হবে এবং বিদেশী ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করার জন্য ইংরেজি ভাষায় যোগাযোগের জন্য সাবলিল হতে হবে।
--অর্থ নাকি দক্ষতা উন্নয়নঃ শুরু থেকেই অর্থের পিছনে না ছুটে নিজের দক্ষতা উন্নয়নে মনোনিবেশ করা উচিত। দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে অর্থই আপনার পিছনে ছুটবে। তাই ধৈর্য ধরুন।
--প্রোফাইল তৈরি করাঃ একজন ভালো মানের ফ্রিল্যান্সার হওয়ার পূর্ব শর্তই হচ্ছে একটি ভালো প্রোফাইল তৈরি করা। কারন আপনি ক্লায়েন্ট এর কাছে পৌঁছাতে পারবেন না কিন্তু আপনার প্রোফাইলটিই আপনার হয়ে কাজ করবে। তাই প্রোফাইল এর মান বৃদ্ধির প্রতি মনোনিবেশ করুন।
--ব্রান্ডিং করুনঃ আমেরিকার একজন ক্লায়েন্ট কিন্তু আপনাকে চিনে না বা জানে না। তাকে চেনানো এবং জানানোর জন্যই আপনার নিজের ব্র্যান্ডিং করতে হবে। বিভিন্ন স্যোশাল সাইটগুলোতে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করুন, নিজেকে সঠিকভাবে তুলে ধরুন।
✔ যাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং নয়
--যারা শর্টকাটে সাফল্য পেতে চায়।
--যারা অল্প কাজ শিখেই আয় করতে চান।
--যাদের নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রতি মনোযোগ নেই।
--যারা মনে করেন ফ্রিল্যান্সিং মানেই ঘরে বসেই মাস শেষে ৫০/৬০ হাজার টাকা আয় করা।
--যারা মনে করেন ৩/৪ মাসের একটি কোর্স করলেই মেন্টর সব শিখিয়ে দিবেন এবং পরবর্তীতে আর কিছু শেখা লাগবে না।
--যারা ভাবেন, “কিছুদিন দেখি, পরে শিখে নিবো নে”।
--যারা নিয়মিত এবং নির্দিষ্ট পরিমান সময় দিতে পারবেন না।
--যাদের পরিশ্রম করার মানষিকতা এবং সামর্থ্য নেই।
--যারা অল্প পরিশ্রমে বেশী আয় করতে চান।
আশা করি উপরের বিষয়গুলো যদি আপনি ভালোভাবে পড়ে থাকেন এবং বুঝে থাকেন তাহলে আপনি আপনার প্রাথমিক জ্ঞান পেয়ে যাবেন। তাই সবকিছু যদি আপনার অনুকূলে থাকে, তাহলে আপনি নিশ্চিতে ফ্রিল্যান্সিং জগতে পা রাখার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন। কিন্তু যদি মনে করেন বেশিরভাগ বিষয়গুলোই আপনার প্রতিকূলে, তাহলে এই পথ আপনার জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
Freelancer – What is a freelancer?
A freelancer is a self-employed person who offers services, often working on several jobs for multiple clients at one time.
Freelancers usually earn money on a per-job basis, charging hourly or daily rates for their work. Freelance work is usually short-term.
While a freelancer is not officially employed by another company, they can be subcontracted by other businesses. It’s common for freelancers to work on several different jobs or projects at once, but some freelance contracts may restrict who else the freelancer can work for until they complete the project.
Some of the most common freelance jobs are within creative industries such as graphic design, copywriting, website development, or photography; however, freelancers can work in almost any service-based industry, such as translation, consulting, or catering.